অগ্রদৃষ্টি ডেস্ক:: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনার জন্য আন্তর্জাতিক অর্থ লেনদেন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সুইফটকেই দায়ী করেছে একটি তদন্ত কমিটি।
কমিটি বলছে, সুইফটের নেটওয়ার্কে আন্তঃব্যাংক লেনদেনের জন্য আরটিজিএস নামে নতুন একটি সিস্টেম স্থাপনের সময় যে ত্রুটি হয়েছে – তাকে কাজে লাগিয়েই বাংলাদেশ ব্যাংকের একাউন্ট হ্যাক করা হয়েছে।
কমিটি একই সঙ্গে মন্তব্য করেছে, এ ব্যাপারে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকও দায়িত্বশীল আচরণ করেনি।
গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি হ্যাকাররা নিউ ইয়র্ক ফেড-এর অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নেয়। ঐ ঘটনার তদন্তের জন্য সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিনকে দায়িত্ব দেয়। এই কমিটি গতমাসে তার রিপোর্ট জমা দিয়েছে।
ড. ফরাসউদ্দিন বিবিসি বাংলাকে বলেন, ১৯৯৫ সাল থেকে সুইফটের মাধ্যমে খুব ভালোভাবেই টাকা লেনদেন করা হচ্ছিল। ২০১৫ সালের মার্চ মাসে একটি চিঠি দিয়ে সিউফট – আরটিজিএসের সাথে তাদের সিস্টেম যুক্ত করতে চায়।
আরটিজিএস বা রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যা একটি দেশের ভেতরে আন্ত:ব্যাংক অর্থ লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
“এই সংযোগের সময় সুইফট এই সিস্টেমের এন্টি-ভাইরাস সুরক্ষার মূলোৎপাটন করে ফেলে। তারা নির্দেশ দেয়া সার্ভারটা ২৪ ঘন্টা খোলা রাখতে হবে। এর ফলে সিস্টেমটা এক্সপোজড বা অ-নিরাপদ হযে যায় “- বলেন ড. ফরাসউদ্দিন।
বিবিসি বাংলার মাসুদ হাসান খানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সুইফটের এ দায়িত্ব অস্বীকার করার কোন উপায় আছে বলে মনে হয় না।
“সাইবার কিমিনালরা এর ওপর নজর রেখে ম্যালওয়্যাার ঢুকিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকেরই একজনের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ইনস্ট্রাকশ পাঠিয়েছে – যা বাংলাদেশ ব্যাংক অথরাইজড ইনস্ট্রাকশন নয়।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের কি তাহলে কোন দায় নেই? এর জবাবে ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, “আমরা বলেছি ক্ষেত্রবিশেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের কান্ডজ্ঞানহীনতা হয়েছে। কর্মকর্তারা অদক্ষতা, অবহেলা বা অযোগ্যতা দেখিয়েছেন।”
তবে তিনি বলেন. বাংলাদেশ ব্যাংকের কেউ এই রিজার্ভ ডাকাতির সাথে প্রত্যক্ষ অংশীদার এমন প্রমাণ এখনো পাওয়া যায় নি।
তবে এ ঘটনা থেকে সুইফট ও বাংলাদেশ ব্যাংক উভয়েরই শিক্ষা নেবার আছে, বলেন ড. ফরাসউদ্দিন।